- 40/1, Safa Garden, Mohammadpur - 1207
- info@tarbiyahonline.com
- +880 1841-514545
- +880 1841-516565
Blog Detail
Lorem Ipsum is simply dummy text of the printing and typesetting industry.
—- উস্তাজ হুসাইন ফাইয়ায
—- ফ্যাকাল্টি, তারবিয়াহ অনলাইন মাদরাসা
ধরুন একটা নির্জন মরুভূমিতে আপনাকে একা ছেড়ে দেয়া হল। আপনি প্রথম কোন প্রয়োজন বোধ করবেন? অবশ্যই খাবার, নিদ্রা ও শ্বাসগ্রহণ। খুব কষ্টে জোগালেন খাবার, তারপর? প্রয়োজন বোধকরলেন নিজের ও বহু কষ্টে জোগানো সম্পদের নিরাপত্তা, যেন কোনোভাবে এগুলো হাতছাড়া না হয়ে যায়। তারপর? অনুভব করলেন একাকীত্ব, তাই তো? এখন কি করবেন? একাকিত্ব কাটাতে পরিবার ও সমাজবদ্ধতার তাগিদ। তারপর নিজের আত্মমর্যাদা বা অন্যান্য বিষয়। একের পর এক এভাবে চলতেই থাকবে, এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও সাধারণত এমনই হয়ে আসছে যুগের পর যুগ।
মার্কিন মনোবিজ্ঞানী আব্রাহাম মাসলো তার “হায়ারার্কি অব নিডস” তত্ত্বে মানুষের প্রয়োজনগুলোকেও এভাবে বিভক্ত করেছেন। যেমন,
১. জৈবিক প্রয়োজন (শ্বাস-প্রশ্বাস, আহার, বস্ত্র ও ঘুম)
২. নিরাপত্তার প্রয়োজন (দৈহিক, আর্থিক ও পারিবারিক)
৩. সামাজিক প্রয়োজন (পরিবার ও সমাজবদ্ধতা)
৪. আত্মতৃপ্তির প্রয়োজন (আত্মমর্যাদা, অর্জন ও বিশেষ দক্ষতা)
৫. সৃজনশীলতা ও বিশেষ অবদানের প্রয়োজন (আত্মস্বীকৃতি ও গ্রহণযোগ্যতা )
কিন্তু ইবরাহীম আ. যখন শিশু সন্তান ও স্ত্রীকে নির্জন মরুভূমিতে রেখে গিয়েছিলেন, তখন তিনি পরিবারের জন্য আল্লাহর কাছে দুয়া করেছিলেন। যেখানে এই সিকুয়েন্সের সম্পূর্ণ বিপরীত দিকগুলোকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন-
رَّبَّنَآ إِنِّىٓ أَسْكَنتُ مِن ذُرِّيَّتِى بِوَادٍ غَيْرِ ذِى زَرْعٍ عِندَ بَيْتِكَ ٱلْمُحَرَّمِ رَبَّنَا لِيُقِيمُوا ٱلصَّلَوٰةَ فَٱجْعَلْ أَفْـِٔدَةً مِّنَ ٱلنَّاسِ تَهْوِىٓ إِلَيْهِمْ وَٱرْزُقْهُم مِّنَ ٱلثَّمَرَٰتِ لَعَلَّهُمْ يَشْكُرُونَ
আমাদের রব! আমি আমার বংশধরদেরকে বসবাস করালাম তোমার পবিত্র গৃহের নিকটে চাষ-বাসহীন উপত্যকায়। আমাদের রব! যেন তারা সালাত কায়েম করে, সেজন্যে কিছু লোকের মন তাদের প্রতি অনুরাগী বানিয়ে দাও, আর তাদের ফলফসল দিয়ে জীবিকা প্রদান করো, যেন তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। (সূরা ইবরাহীম-৩৭)
এখানে প্রিয় নবী ইবরাহীম আ. জীবন ধারণের মৌলিক প্রয়োজন ছেড়ে
আল্লাহর ইবাদাতের তাউফীক কামনা করেছেন। (আত্মমর্যাদা ও রবের দাসত্বের স্বীকৃতি) ।
একটি কমিউনিটি কামনা করেছেন। (সামাজিক প্রয়োজন)
তারপর ফলফসল, যা জীবন ধারণে সহায়ক। (জৈবিক প্রয়োজন)
ইবরাহীম আ. এর দুয়ায় আমাদের জন্য যে শিক্ষা রয়েছেঃ
সবকিছুর উপর আল্লাহর দ্বীনকে প্রাধান্য দেয়া
দ্বীন পালনে জৈবিক চাহিদাকেও বিসর্জন দেবার মানসিকতা থাকা
ব্যক্তিগত আমলের পাশাপাশি সমাজের সবাইকে দাওয়াত দেয়া
সলাতের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়া
জীবনের যা কিছু অর্জন- সবকিছুতে রবের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা
সন্তানের প্রতি পিতার এ-দোয়ার প্রতিফলন ঘটে পুত্র ইসমাইল আ. এর জীবনেও। শিশুকালেই যখন আল্লাহর পথে নিজেকে উৎসর্গ করার আহ্বান করা হয়। বিনা বাক্য ব্যয়ে তিনি নিজেকে সমর্পন করেছেন রবের তরে। এভাবে সুচনা ঘটে একটি সৎ ও দ্বীনদার প্রজন্মের। যার প্রান্তে রয়েছেন শ্রেষ্ঠমানব মুহাম্মাদে আরাবি সল্লাল্লাহু আলাইকি ওয়া সাল্লাম।
নিজ সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্মকে সৎ, দ্বীনদার ও আল্লাহভিরু হিসেবে গড়ে তুলতে নাবি-রাসুলদের অনুসরণ করুন। ইবরাহীম আ. এর মত আপনিও সন্তানকে দ্বীন পালনে অভ্যস্ত করে তুলুন। তাহলেই গড়ে উঠবে একটি সুন্দর সমাজ। সূচনা হবে একটি সভ্য জাতির।