ভূমিকা
সমাজ একটি সূক্ষ্ম ও সংবেদনশীল কাঠামো। এই কাঠামোর মূল ভিত্তি হল নীতি-নৈতিকতা, ধর্মীয় ও পারিবারিক মূল্যবোধ। একজন নারী শুধু একজন ব্যক্তি নয়, বরং একটি পরিবারের মেরুদণ্ড এবং একটি জাতির ভবিষ্যতের রূপকার। কিন্তু যখন এই নারীর নৈতিকতা ও আদর্শের ভিত নড়ে যায়, তখন পুরো সমাজ ব্যবস্থায় এক ধরণের ভাঙন শুরু হয়।
নারীর পথভ্রষ্টতা: শুরু হয় যেখানে
নারীর চরিত্র ও আচরণ যদি ধর্মহীনতা, নগ্নতা, অবাধ্যতা ও আত্মম্ভরিতায় রূপ নেয়, তবে সমাজে সৃষ্টি হয় এক গভীর সঙ্কট। তারা যখন নিজ কর্তব্য, লজ্জাশীলতা এবং মাতৃত্ববোধ ভুলে গিয়ে নিজের জীবনকে শুধু ভোগবিলাস আর ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে বিকিয়ে দেয়, তখনই সমাজের প্রথম ক্ষয়িষ্ণুতা শুরু হয়।
পুরুষের পতন: নীরবে নিঃশেষ হয়ে যাওয়া
যে সমাজে নারীরা নিজের পথ হারায়, সেখানে পুরুষরা ধীরে ধীরে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। তারা চোখের আড়ালে হারিয়ে যায়—কখনো মাদকাসক্তিতে, কখনো পর্নগ্রাফির নেশায়, আবার কখনো হতাশায় ডুবে আত্মহননের পথ বেছে নেয়। তারা বাহ্যিকভাবে বেঁচে থাকলেও ভেতরে তারা ক্ষয়ে যেতে থাকে।
নারী-পুরুষ ভূমিকার উলটাপালটা
এই সংকট যত গভীর হয়, সমাজে দেখা দেয় ভয়ঙ্কর এক রূপান্তর। নারীরা পুরুষসুলভ হয়ে ওঠে—দায়িত্বহীন, কর্তৃত্বপরায়ণ ও পরিবারবিমুখ; অন্যদিকে পুরুষরা হয়ে পড়ে আবেগপ্রবণ, আত্মবিশ্বাসহীন ও দুর্বলচেতা। লিঙ্গভিত্তিক স্বাভাবিক ভূমিকা পাল্টে যায়। পরিবারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, সন্তানরা দিশাহারা হয়ে পড়ে।
সমাধান: প্রত্যাবর্তন মূল্যে ও আদর্শে
এই অবক্ষয়ের মোকাবিলায় দরকার মূল্যবোধের প্রতি প্রত্যাবর্তন।
নারীরা যেন ইসলামি আদর্শে নিজেকে গড়েন—লজ্জা, দয়া, মাতৃত্ব ও বিবেকের ধারক হয়ে ওঠেন।
পুরুষরা যেন দায়িত্ববান হন, পরিবার ও সমাজের রক্ষক রূপে নিজেকে তৈরি করেন।
পারিবারিক শিক্ষার পুনর্জাগরণ এবং মিডিয়া ও শিক্ষাব্যবস্থায় চরিত্রনির্মাণমূলক পরিবর্তন আনা দরকার।
উপসংহার
নারী ও পুরুষ—উভয়েই একটি সমাজের দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। যেকোনো একটির পতন মানেই পুরো কাঠামোর ধ্বংস। তাই আমাদের সবার দায়িত্ব, বিশেষ করে পরিবারের অভিভাবক, আলেম-ওলামা ও শিক্ষকদের কর্তব্য—এই অবক্ষয় রোধে সোচ্চার ও সচেতন হওয়া। কারণ, সমাজ বাঁচে তখনই, যখন নারী সঠিক পথে, আর পুরুষ দৃঢ় দায়িত্বশীল।
শেষ কথায়:
“যে সমাজের নারীরা পথভ্রষ্ট হয়ে যায়, সে সমাজের পুরুষরা ধীরে ধীরে ঝরে যায়, চক্ষুর আড়ালে চলে যায়, বহু রোগশোকে জর্জরিত থাকে, এবং নারীরা পুরুষ আর পুরুষরা নারীতে পরিণত হয়”—এটি কোনো কল্পকাহিনি নয়; এটি বাস্তবতার ভয়াবহ চিত্র। এখনো সময় আছে, ফিরে আসুন মূল্যে, ফিরে আসুন আলোর পথে।